রাগরূপ নির্ণয়

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ রাগরূপ নির্ণয়।

রাগরূপ নির্ণয়

 

রাগরূপ নির্ণয়

 

রাগরুপ নির্ণয়

উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বা রাগ সঙ্গীত কলাবিদ্যা যাকে আমরা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বলি। এটা বহু প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত আছে। প্রাচীনকালে মুনিঋষিরা এবং সঙ্গীত সাধকরা অতি নিষ্ঠার সাথে রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করেছেন। প্রকৃতির অবস্থা এবং মানুষের মানসিক অবস্থা নিখুঁতভাবে বিচার ও বিশ্লেষণ করে রাগরূপ তৈরী করেছেন। বহু প্রাচীনকালেই ছয় রাগ ও ছত্রিশ রাগিণী ছিল।

শিবমতে ছয় রাগ, ব্রহ্মার মতানুসারে (১) ভৈরব, (২) নটনারায়ণ, (৩) পঞ্চম, – (৪) মেঘ, (৫) বসন্ত ও (৬) শ্রী। আবার প্রতিটি রাগের ছয়টি করে রাগিণী ছিল- এইজন্য ছয় রাগ ও ছত্রিশ রাগিণী বলা হয়।

 

রাগরূপ নির্ণয়

 

ছয় রাগ ও ছত্রিশ রাগিণী সম্বন্ধে প্রাচীনকাল থেকেই নানা মত আছে। বর্তমান যুগে পন্ডিত ভাতখন্ডে সমস্ত রাগ-রাগিনী হতে বিচার ও বিবেচনা করে প্রধান দশটি ঠাট নির্ণয় করেছেন। এই দশটি ঠাটের লক্ষণ ধরে বর্তমানের সমস্ত রাগরূপ নির্ণয় করা হয়। বর্তমানে উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতে এই দশটি ঠাটকেই মানা হয় ।

বাদীস্বর অনুসারে রাগ পরিবেশনের সময়

প্রথমে স্বর সপ্তককে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। যেমন- সা, রা, গা, মা ও পা ধা না র্সা। এই ভাগের প্রথম ভাগকে বলা হয় সপ্তকের পূর্বাঙ্গ ও দ্বিতীয় ভাগকে বলা হয় সপ্তকের উত্তরাঙ্গ । পরবর্তীকালে এই সপ্তক ভাগকে একটু পরিবর্তন করে লওয়া হয়েছে ।

অনেক সময় দেখা যায়, কোন রাগের বাদীস্বর ‘মা’ হলেও উহা উত্তরাঙ্গবাদী রাগ আবার কোন রাগের বাদীস্বর ‘পা’ হলেও উহা পূর্বাঙ্গবাদী রাগ। সেই কারণে প্রথম ভাগ সা, রা, গা, মা, এবং দ্বিতীয় ভাগ পা, ধা, না, র্সা এইভাবে ভাগ করা হয়েছে।

এইবার দিবারাত্রির ২৪ ঘন্টাকে সমান দুইভাগে ভাগ করতে হবে। যেমন- প্রথম ভাগ দিবা ১২টা হতে রাত্রি ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ভাগ রাত্রি ১২টা হতে পরদিন বেলা ১২টা পর্যন্ত । ইহাদের প্রথম ভাগকে বলা হয় সময়ের পূর্বাঙ্গ ও দ্বিতীয় ভাগকে বলা হয়।

সময়ের উত্তরাঙ্গ যদি কোন রাগে বাদীস্বর সপ্তকের পূর্বাঙ্গে অর্থাৎ সা, রা, গা, মা, এই স্বরগুলোর মধ্যে থাকে। তবে তাকে পূর্বাঙ্গে অর্থাৎ দিবা ১২টা হতে রাত্রি ১২ টার মধ্যে পরিবেশন করতে হবে। যেমন- ইমন, ভূপালী, ভীমপলশ্রী ইত্যাদি ।

 

রাগরূপ নির্ণয়

 

যদি কোন রাগের বাদীস্বর সপ্তকের উত্তরাঙ্গে অর্থাৎ পা, ধা, না, সা এই স্বরগুলোর মধ্যে থাকে, তবে তাকে উত্তরাসে অর্থাৎ রাত্রি ১২টা হতে পরের দিন বেলা ১২টার মধ্যে পরিবেশন করতে হবে। যেমন- বিলাবল, আসাবরী, ভৈরব, ভৈরবী ইত্যাদি ।

আরও দেখুন:

Leave a Comment