আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ সঙ্গীতের উদ্ভব।
সঙ্গীতের উদ্ভব
সঙ্গীতের উদ্ভব
মানব-জাতির ইতিহাসে বিবর্তনবাদ যদি স্বীকার করে নেওয়া যায় তাহলে সঙ্গীত ও নৃত্যের অভিব্যক্তি মানব-বিকাশের সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট। সঙ্গীতের জন্ম সম্বন্ধে পৌরণিক ব্যাখ্যা এবং ধর্মীয় ব্যাখ্যা যাই থাক না কেন বিভিন্ন দেশে এর বিভিন্ন রকমের তত্ত্ব আছে ।
এমন কি নানান আদিম জাতিরাও সঙ্গীতের জন্ম সম্বন্ধে নানা মতামত পোষণ করে। ভারতীয় শাস্ত্রে সঙ্গীতের সৃষ্টি, নাদের উৎপত্তি, স্বরের উৎপত্তি ও তত্ত্বগত বৈশিষ্ট্য নানাভাবেই আলোচিত, কিন্তু মানবজীবনের বিবর্তনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তত্ত্বগুলো পাশ্চাত্য দেশে নানাভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সঙ্গীতের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছে? এর উত্তরেঃ
১।ডারউইনের ভাবনাঃ সঙ্গীতের উৎপত্তি যৌন-জীবনের সংস্পর্শেই হয়েছে, যথা- বিশেষ ঋতুতে পাখী ডেকে ওঠে মিলনের উদ্দেশ্যে।
২।এই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আর একটি ভাবনা-মানুষের সঙ্গীত অনুকরণের ফসল- পাখী বা পশুর ডাকাডাকির অনুকরণ ।
৩। ছন্দ বা Rhythm theory বা তালে অভিব্যক্তি থেকে সঙ্গীতের উৎপত্তি। কর্মসঙ্গীত এর উদাহরণ।
8। আর একটি মতানুসারে সঙ্গীত আসে অনুভুতির চাপে। সহজাত ভাব ও অনুভুতি এর কারণ। স্পেন্সারের থিওরি অনুসারে ভাবানুভূতি ও আবেগই এর মূল কারণ। রুশো, হাবার্ট স্পেন্সার এই মন্ত্রের প্রবক্তা। উচ্চ কন্ঠে কথায় প্রথম সুর প্রয়োগ impassioned speech.
৫ । অন্য একটি মতানুসারে প্রাথমিক সঙ্গীতের উৎপত্তি শিশু পরিচর্যার ফলশ্রুতি ছড়া বা ঘুম পাড়ানীর আদিম সুর থেকে উৎপত্তি।
৬। আর একটি মতানুসারে কথার সুরকে নিয়েই সঙ্গীতের উৎপত্তি।
৭। দূর থেকে ডাকাডাকির প্রথম প্রকাশের মধ্য দিয়ে সুরের উৎপত্তি ও সেই সঙ্গে সঙ্গীতের উদ্ভব।
৮। একটি মতে কথা ও ভাবসৃষ্টির আগেই সঙ্গীতের উৎপত্তি হয়েছে। পৃথিবীতে সাংগীতিক ভাষাও ছিল যাতে সুর দিয়েই ভাবপ্রকাশ করা হতো।
এই বহু মতামতের আলোচনা কালে আদিম সংস্কৃতি বিশ্লেষণের সঙ্গে মিলিয়ে দূর থেকে ডাকাডাকি ও কথার সঙ্গে সুরের সম্পর্ক ও বিকাশ এই দুটোকেই অনেকে বিশেষ স্থান দেন। কিন্তু এই সমস্তগুলো কারণই নানাভাবে সঙ্গীতের উদ্ভবের নানা স্তর সৃষ্টি করেছে। সঙ্গীতের উদ্ভব যেভাবেই হোক না কেন, আদিম সঙ্গীতে নিয়ম গঠিত হয়েছিল। কিন্তু স্বররীতিকে বুঝতে দরকার যন্ত্র-সঙ্গীতের উদ্ভব, তা হয়েছিল অনেক পরবর্তীকালে ।
আরও দেখুন: