আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়ঃ সঙ্গীতের স্বর।
সঙ্গীতের স্বর
সঙ্গীতের স্বর
১। সা (ষড়জ) সঙ্গীতের প্রথম স্বর। ময়ুরের কন্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে।
২। রে (রেখাব) সঙ্গীতের দ্বিতীয় স্বর। চাতকের কন্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে।
৩। গা (গান্ধার) সঙ্গীতের তৃতীয় স্বর। মেষের কন্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে।
৪। মা(মধ্যম) সঙ্গীতের চতুর্থ স্বর এবং ৭টি স্বরের মধ্যম স্বর ।
মধ্য স্বর
১-সা
২-মা
৩-রে
৪-গা
৫-পা
৬-ধা
৭-নি
এইজন্য ইহাকে মধ্যম বলা হয়। মধ্যম স্বর দিয়ে সপ্তকের পূর্বাঙ্গ ও উত্তরাস দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইহা কাকের কন্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে ।
৫।পা (পঞ্চম) সঙ্গীতের পঞ্চম স্বর। কোকিলের কন্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে।.
৬। ধা (ধৈবত) সঙ্গীতের ষষ্ঠ স্বর। ব্যাঙের কণ্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে ।
৭। নি (নিষাদ) সঙ্গীতের সপ্তম স্বর। হস্তীর কণ্ঠস্বর হতে নেওয়া হয়েছে ।
প্রাচীনকালে সঙ্গীত সাধক ও ঋষিরা পশুপক্ষীর কন্ঠস্বর থেকে স্বর ও ধ্বনি নিয়ে, তাকে Refine ও সঙ্গীত উপযোগী করে শ্রুতিমধুর অংশগুলোকে সঙ্গীতে ব্যবহার করেছেন। এইজন্য সঙ্গীতের সুর ও স্বরে অনেক পাখীর সুমিষ্ট ধ্বনির সহিত সাদৃশ্য আছে ।
স্বর
জাতি
কোন রাগের আরোহী অবরোহী ভেদে স্বর নিরুপন করাকে জাতি বলে। জাতি তিন প্রকার যথাঃ
১ । ঔড়বঃ যে রাগে আরোহী অবরোহীতে ৫টি স্বর ব্যবহার হয় তাকে ঔড়ৰ জাতি বলে।
২ । খাড়বঃ যে রাগে আরোহী অবরোহীতে ৬টি স্বর ব্যবহার হয় তাকে খাড়ব জাতি বলে ।
৩। সম্পূর্ণঃ যে রাগে আরোহী অবরোহীতে ৭টি স্বর ব্যবহার হয় তাকে সম্পূর্ণ জাতি বলে ।
উপরোক্ত তিন প্রকার জাতি হতে আবার আরোহী এবং অবরোহীতে ব্যবহার স্বর সংখ্যা অনুসারে মোট নয় প্রকার জাতি উৎপন্ন হতে পারে । যেমনঃ
১। আরোহীতে ৭টি অবরোহীতে ৭টি স্বর = সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ জাতি ।
২। আরোহীতে ৬টি অবরোহীতে ৬টি স্বর বাড়ব-খাড়ব জাতি ।
৩। আরোহীতে ৫টি অবরোহীতে ৫টি স্বর = ঔড়ব-ঔড়ব জাতি।
৪। আরোহীতে ৭টি অবরোহীতে ৬টি স্বর = সম্পূর্ণ-খাড়ব জাতি।
৫। আরোহীতে ৭টি অবরোহীতে ৫টি স্বর = সম্পূর্ণ-ঔড়ৰ জাতি ।
৬। আরোহীতে ৬টি অবরোহীতে ৭টি স্বর = খাড়ব-সম্পূর্ণ জাতি। ৭। আরোহীতে ৬টি অবরোহীতে ৫টি স্বর = খাড়ব-ঔড়ব জাতি।
৮। আরোহীতে ৫টি অবরোহীতে ৭টি স্বর = ঔড়ব-সম্পূর্ণ জাতি । ২৯। আরোহীতে ৫টি অবরোহীতে ৬টি স্বর = ঔড়ব-খাড়ব জাতি।
এক ঠাট হতে নয় জাতির মাধ্যমে কি প্রকারে ৪৮৪টি রাগের উৎপত্তি হয়েছে তা নিম্নে দেওয়া হলোঃ
১। সম্পূর্ণ-সম্পূর্ণ = ১ × ১ = ১ টি রাগ
২। সম্পূর্ণ-খাড়ব = ১ ×৬= ৬ টি রাগ
৩। সম্পূর্ণ-ঔড়ব = ১ × ১৫ = ১৫ টি রাগ
৪। খাড়ব-সম্পূর্ণ = ৬ × ১ = ৬ টি রাগ
৫। খাড়ব-খাড়ব = ৬ × ৬ = ৩৬ টি রাগ
৬। খাড়ব-ঔড়ব = ৬ × ১৫ = ৯০ টি রাগ
৭। ঔড়ব-সম্পূর্ণ = ১৫ × ১ = ১৫ টি রাগ
৮। ঔড়ব-খাড়ব = ১৫×৬ = ৯০ টি রাগ
৯। ঔড়ব-ঔড়ব = ১৫× ১৫ = ২৭৫ টি রাগ
সর্বমোট= ৪৮৪ টি রাগ।
আরও দেখুন: